শামীম আল আমিন

শামীম আল আমিন সাংবাদিক ও লেখক। সংবাদ সংগ্রহের জন্য বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে তা তুলে ধরেন পাঠকের কাছে। কিন্তু সাহিত্য রচনায় তিনি বাস্তব, পরাবাস্তব এবং কল্পণার অদ্ভূত এক মিশ্রণ ঘটান। মূলত: লেখেন গল্প, উপন্যাস ও ভ্রমণ। শিশুদের জন্যে অনেকগুলো বই রয়েছে তার। সাংবাদিকতা ও বিতর্কের কলাকৌশলের উপর লেখা তার বইগুলোও হয়েছে অত্যন্ত পাঠকপ্রিয়। তবে এবার ইতিহাস নির্ভর কিছু বই লেখার প্রতি গভীরভাবে মনোযোগী হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বিদেশী বন্ধু সক্রিয়ভাবে পাশে থেকেছেন, নানাভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন; কাজ করছেন তাদেরকে নিয়ে। এ জন্যে তিনি নিউইয়র্কে গড়ে তুলেছেন ‘ফ্রেন্ডস অব ফ্রিডম’ নামে একটি সংগঠন। যার অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী বন্ধুদের অসামাণ্য উদ্যোগ ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ, গবেষণা এবং স্মৃতি স্মারক সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়ের নির্ভুল এবং সচল ইতিহাস তুলে আনতে চান তিনি। ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অন্যপ্রকাশ থেকে তাঁর লেখা ইতিহাসনির্ভর গবেষণাধর্মী বই ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ বিপুল সাড়া ফেলে। দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানো ছিল তার কাজের অংশ। অনেক ঘুরে এখন স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। তবে এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে গুরুত্বপূর্ণ নানা ইভেন্টের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কাভার করেছেন একাধিকবার। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নির্বাচনেরও সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া ভুটানে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন, গ্রিসে দুর্নীতিবিরোধী সম্মেলন আর ডেনমার্কের জলবায়ু সম্মেলন এবং অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যোগ দিয়েছিলেন সাংবাদিক হিসেবে।

আরও ভ্রমণ করেছেন শ্রীলংকা, নেপাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জাপান, জার্মানি, সুইডেন, ইতালি, ফ্রান্স এবং কানাডা। বাংলাদেশে পত্রিকা, অনলাইন এবং টেলিভিশনে সাংবাদিকতা করেছেন দীর্ঘদিন। সংবাদকর্মী হিসেবে এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসেও কয়েকটি বাংলা ভাষার টেলিভিশন প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। অনুষ্ঠান সঞ্চালক হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। একাত্তর টেলিভিশনের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর ছিলেন। সরাসরি সম্প্রচারিত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘একাত্তর জার্নাল’ সঞ্চালনা করতেন নিয়মিত। মঞ্চের অনুষ্ঠানেও তিনি প্রাণবন্ত; অনেকের প্রিয়। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার। পেয়েছেন জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ স্বর্ণপদক। সাংবাদিকতার জন্যে মোনাজাত উদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল পুরস্কার, ইউনেস্কো ক্লাব অ্যাওয়ার্ড, পরিবার পরিকল্পণা সমিতি পুরস্কার, সন্ধানী সেফ ব্লাড অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু পুরস্কার লাভ করেছেন। সাংবাদিকতার উপর তার লেখা চারটি বই ‘গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা’, ‘টেলিভিশন সংবাদ ও সাংবাদিকতা’, ‘টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপনা’ এবং ‘টেলিভিশন সাংবাদিকতার সহজ পাঠ’ বিপুল পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। শামীম আল আমিন পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। ২০০০ সালের এম এস এস পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে লাভ করেছেন মসউদ খান স্বর্ণপদক। একই বিভাগ থেকে স্নাতক করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে। বিতার্কিক হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তার। ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সহসভাপতি। সূর্যসেন হল বিতর্ক ক্লাব (সূর্যসেন বিতর্ক ধারা) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। হলটির হয়ে ১৫তম ও ১৬তম জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। তার লেখা ‘বিতর্কের সরল পাঠ’ এবং ‘বিতর্ক ও বিতার্কিক’ বই দুটি বহুল পঠিত। ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফিল্ম সোসাইটির সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। তার লেখা দুটি বই ইংরেজিতে অনুদিত হয়েছে। গল্পগ্রন্থ ‘The Deep Night Sky’ এবং শিশুতোষ গল্পের বই ‘Sulky Arisha and Her Squirrel পাওয়া যাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত অনলাইন প্লাটফর্ম অ্যামাজন ডট কমে।

শামীম আল আমিনের জন্ম ১ জানুয়ারি, ঢাকার শান্তিবাগে। এরপর থেকে কৈশোর পর্যন্ত সেখানেই বেড়ে ওঠা। বাবা মুন্সী মুনছুর আহমদ এবং মায়ের নাম মিসেস সালেহা বেগম। তার স্ত্রী কবি, ইয়োগা আর্টিস্ট এবং ফিটনেস এক্সপার্ট আশরাফুন নাহার লিউজা। এই দম্পতির একমাত্র কন্যা অপর্ণা আমিন পড়াশোনা করছে নিউইয়র্কে। এই পৃথিবী থেকে একদিন সব বৈষম্য ও অনাচার দূর হবে, মানুষে মানুষে সম্পর্ক হবে ভালোবাসা আর মমতার বিনিময়ে; এমন দিনের ভাবনায় লিখে চলেন তিনি। ক্লান্তিহীন পথিক তিনি হেঁটেই চলেছেন। থামার সময় যে তার নেই।

Sort By

  • গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা (হার্ডকভার) – শামীম আল আমিন

    ৳ 280.00
    Buy product

    গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা (হার্ডকভার) – শামীম আল আমিন

    গণমাধ্যম আধুনিক জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ। আর পেশা হিসেবেও সাংবাদিকতার রয়েছে গৌরবময় অবস্থান। একদিকে গণমাধ্যম আমাদের প্রতিদিনের জীবনে তথ্যের যোগানদাতা, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। জানাচ্ছে কখন, কী করতে হবে। গণমাধ্যম তাই বাতাসের মতোই মিশে আছে আমাদের জীবনে। আজকের দিনে উন্নয়ন, সুশাসন, জবাবদিহিতা, জনমত সৃষ্টি কিংবা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের রয়েছে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা।

    ৳ 280.00
  • দেশে দেশে দশ (হার্ডকভার) দশটি ভ্রমণ গল্পের সংকলন – শামীম আল আমিন

    ৳ 350.00
    Buy product

    দেশে দেশে দশ (হার্ডকভার) দশটি ভ্রমণ গল্পের সংকলন – শামীম আল আমিন

    উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ। জানা, দেখা টেন ডাউনিং স্ট্রিটে কে বসেন। লন্ডনের রাস্তা ধরে চলতে চলতে সেই উত্তরের বাইরে দেখা হয়ে গেল অনেক কিছুই। হলিউড সাইন ঝোলানো পাহাড়টার যে আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্য নেই, না দেখলে অনেকেই হয়তো বুঝতেই পারবেন না। তাহলে কিভাবে তৈরি হচ্ছে বিশ্ব কাঁপানো সব চলচ্চিত্র? সামনে আসবে এমন প্রশ্ন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারতের নির্বাচন, রাজনীতির খোলনলচে সামনে থেকে দেখার সুযোগ না পেলেও, বইটা পড়ে পাওয়া যাবে কিছু ধারণা। থাইল্যান্ডে প্রতারক; ভাবা যায়! এরপরও সুন্দর শ্যামদেশ। আবার থিম্পুর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে কষ্টের হাহাকার। মৎস্যকন্যার দেশে এক জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টকে কাছ থেকে দেখা, সাক্ষাৎকার নেয়ার অভিজ্ঞতার বয়ান মিলবে এতে। গ্রিক সভ্যতার ইতিহাস মোড়ানো। অ্যাক্রোপলিসের দেয়াল, আর ভ্যাটিকান সিটির ভেতরটা কেমন-অনুভূতিকে স্পর্শ করবে সেই ধারণা। পৃথিবী জোড়া আলোড়ন তুলে চির রহস্য নারী হয়ে থাকা মোনালিসা দর্শনের অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। জানা যাবে, হিরোশিমার কষ্ট, দুঃখ পৃথিবী থেকে আজও বিলীন হয়ে যায়নি।

    ৳ 350.00
  • সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড (হার্ডকভার) – শামীম আল আমিন

    ৳ 300.00
    Buy product

    সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড (হার্ডকভার) – শামীম আল আমিন

    আমেরিকার খ্যাতিমান কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ। ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছিল; তখন তিনি গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখানে বেশ কয়েকজন সাহিত্যিকের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। তাদেরই একজন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। একদিকে পাকস্তানি বাহিনীর বর্বর হত্যা নির্যাতন, অন্যদিকে বীর বাঙালির প্রবল প্রতিরোধ। তার মধ্যেই অসংখ্য মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। তারা আশ্রয় নেয় প্রতিবেশি ভারতের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন শহরে। অ্যালেন গিন্সবার্গ সিদ্ধান্ত নিলেন শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা নিজ চোখে দেখতে যাবেন। বন্ধু সুনীল ও আরও দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে রওয়ানা হয়ে গেলেন তিনি। তখন সেপ্টেম্বর মাস। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে যশোর রোড পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে অনেক কষ্টে বনগাঁ পেরিয়ে যশোর সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছান তাঁরা। পরিস্থিতি দেখতে যান আশপাশের শরণার্থী ক্যাম্পে। গিন্সবার্গ কথা বলেন শরণার্থী হয়ে আসা অনেকের সঙ্গে। এরপর নিউইয়র্কে ফিরে গিয়ে নভেম্বর মাসে তিনি লেখেন তাঁর কালজয়ী কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। অ্যালেন গিন্সবার্গের ঐতিহাসিক সেই কবিতার মূলভাবকে উপজীব্য করে লেখা হয়েছে বইটি। আর বইটির নামও নেয়া হয়েছে গিন্সবার্গের কবিতার শিরোনাম থেকেই। ইতিহাসের একটি অধ্যায়কে একসঙ্গে তুলে ধরাই বইটির উদ্দেশ্য। আশা করছি পাঠকের ভালো লাগবে। হয়তো সংগ্রহে রাখতে চাইবেন অনেকে।

    ৳ 300.00